জেনে নিন রসুনের গুণাগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা

জেনে নিন  রসুনের একাধিক গুণাগুণ এবং উপকারিতা

by Dr. Baby Akter
খালি-পেটে-রসুন-খাওয়ার-উপকারিতা-ও-অপকারিতা

যদি সুস্থ থাকতে চান, তাহলে নিয়ম করে প্রতিদিন সকালবেলা হোক বা অন্য যে কোনো সময় ১ থেকে ২ কোয়া বা ২ কোষ কাঁচা রসুন খান এবং অবশ্যই অবশ্যই চিবিয়ে খাবেন। আপনি সুস্থ, কর্মময় এবং দীর্ঘ জীবনের অধিকারী হবেন।

রসুনের একাধিক গুণাগুণ এবং উপকারিতা

  • উচ্চ রক্ত চাপ কমাতে: উচ্চ রক্তচাপ কমানোর জন্য অত্যন্ত কার্যকরী রসুন। যদি শরীরের এলডিএল বেড়ে যায় তবে রক্তচাপ বেড়ে যায়। এতে প্রতিদিন দুই কোয়া রসুন সকালে খালি পেটে খেলে উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যা থাকবে না।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে: রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে রসুনের অ্যান্টিফাঙ্গাল অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণ অত্যন্ত কার্যকরী। খালি পেটে রসুন খেলে এই উপকার বেশি পাওয়া যায়।
  • হৃৎপিণ্ডের শক্তিবর্ধক: প্রতিদিন সকালে খালি পেটে দুই কোয়া রসুন খেলে হৃৎপিণ্ড শক্তিশালী হবে, রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধির কারণে হৃৎপিণ্ডের ব্লকগুলো আর বাড়বে না। 
  • পুরুষের যৌনক্ষমতা বৃদ্ধিতে: সকালে খালি পেটে রসুন খাওয়া পুরুষদের জন্য একটি বিশেষ উপকারি অভ্যাস। রসুন অ্যালিসিন এবং সেলেনিয়ামে সমৃদ্ধ। অ্যালিসিন যৌন অঙ্গে রক্ত ​​​​প্রবাহ উন্নত করে এবং শুক্রাণুর যে কোনও ক্ষতি প্রতিরোধ করে। সেলেনিয়াম একটি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যা গতিশীলতা বাড়ায়। 
  • রক্ত সঞ্চালন ক্ষমতা বৃদ্ধিতে: রক্ত সঞ্চালন ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে দুই কোয়া রসুন খুব উপকারী। এতে  রক্ত সঞ্চালন ক্ষমতা বৃদ্ধির ফলে রক্ত বাধাগ্রস্ত হয়ে যেসব রোগের সৃষ্টি করে, তা আর হতে পারে না।  
  • ফুসফুসের সংক্রমণ প্রতিরোধে: যাদের অ্যালার্জি সমস্যা, ঠান্ডা লাগার প্রবণতা আছে তাদের বিভিন্ন কারণে ফুসফুসের সংক্রমণ হতে পারে। এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে রসুন পিষে রস খেলে সংক্রমণ সহজে রোধ করে।
  • ত্বক ভালো রাখতে: ত্বক ভালো রাখতে এবং ত্বকে বার্ধ্যকের ছাপ ও চেহারার যে কোনো দাগ কমাতে প্রতিদিন দুই কোয়া রসুন খালি পেটে খেলে অধিক উপকার পাওয়া যায়।   
  • সংক্রমণ প্রতিরোধে:  মানুষের শরীরে যে কোনো সময়ে সংক্রমণ ঘটতে পারে। কোন ধরণের পূর্ব লক্ষণ ছাড়া মানব শরীরে সংক্রমণ রোগ দেখা দেয়। তাই প্রতিদিন সকালে খালি পেটে দুই কোয়া রসুন খেলে শরীর সংক্রমণ প্রতিরোধ করে।
  • হাড়ের শক্তি বাড়ায়: বিভিন্ন কারণে নারীদের ক্ষেত্রে একটা বয়সের পর হাড়ের শক্তি কমে যায়। এই ধরণের হাড় সংক্রান্ত সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য প্রতিদিন ২ গ্রাম করে রসুন খেলে নারীদের শরীরে ইস্ট্রোজেনের মাত্রায় ভারসাম্য থাকে।
  • ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমায়: এলডিএল কোলেস্টেরলই হৃদরোগ, স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক, উচ্চ রক্তচাপের জন্য দায়ী। কাঁচা রসুন যখন আপনি নিয়মিত খাবেন তখন আপনার রক্তের যে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল, টোটাল কোলেস্টেরল এবং এলডিএল কোলেস্টেরলের মাত্রা কমতে থাকবে। ফলে সহজেই আপনি এ রোগগুলো প্রতিরোধ করতে পারবেন।
  • অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এর কাজ করে: নিয়মিত কাঁচা রসুন খেলে রসুনে উপস্থিত অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট ‘সেল ড্যামেজ’ ও ‘এজিং’ রোধ করে। মস্তিষ্কের সেল ড্যামেজ কম হওয়ার কারণে আলঝেইমারস ও ডিমেনশিয়ার মতো রোগের সম্ভবনা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
  • দীর্ঘায়ু হওয়া: প্রতিদিন কাঁচা রসুন খাওয়ার ফলে রসুন পাওয়ারফুল ডিটক্স হিসেবে কাজ করে। এতে শরীরের ভেতরে যত ময়লা-আবর্জনা সব বের হয়ে রক্তের পরিশোধনক্ষমতা বেড়ে যায়, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে ও শরীর ভালো রাখে, নিরোগ দেহ নিঃসন্দেহে দীর্ঘায়ু হয়। 

কাঁচা রসুন খাওয়ার অপকারিতা

শরীরের অনেক সমস্যার জন্যই রসুন খুব উপকারি। তবে রসুনের কিছু কিছু গুণের জন্য অনেক শারীরিক সমস্যা বেড়েও যেতে পারে। যেমনঃ 

  • রসুনে থাকে সালফার, তা পেটে গ্যাস তৈরি করে। এতে খালি পেটে রসুন খেলে ডায়রিয়া হওয়ার সম্ভবনা থাকে।  
  • গর্ভবতী নারীদের রসুন খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। গর্ভবতী অবস্থায় অতিরিক্ত রসুন খেলে প্রসব বেদনা বেড়ে রক্তক্ষরণ হতে পারে। এ ছাড়াও শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানো মায়েরাও রসুন খাবেন না। এতে দুধের স্বাদ পাল্টে যেতে পারে।
  • মাত্রাতিরিক্ত রসুন  খাওয়ার কারণে ‘হাইফিমা’ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অর্থাৎ ‘আইরিস’ ও ‘কর্নিয়া’র মাঝে রক্তক্ষরণ ঘটাতে পারে। ফলস্বরূপ দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে যেতে পারে। ।

You may also like

Leave a Comment